সূরা আন-নাসর

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ইসলাম শিক্ষা - কুরআন ও হাদিস শিক্ষা | | NCTB BOOK
10
10

সূরা আন-নাসর পবিত্র কুরআনের ১১০তম সূরা। এ সূরার ‘নাসর’ শব্দ থেকে সূরাটির নাম রাখা হয়েছে আন- নাসর। এর আয়াত সংখ্যা তিন। এই সূরা মক্কায় বিদায় হজ্জের সময় অবতীর্ণ হয়েছিল। কিন্তু সঙ্গা অনুযায়ী, যে সমস্ত সূরা হিজরতের পরে অবতীর্ণ হয়েছে, সেগুলো হলো মাদানি সূরা। এ জন্য এ সূরাও মাদানি সূরা।

ব্যাখ্যা

সূরা আন-নাসর কুরআনের সর্বশেষ অবতীর্ণ সম্পূর্ণ সূরা। এরপর কয়েকটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে; কিন্তু আর কোনো সম্পূর্ণ সূরা অবতীর্ণ হয়নি। এ সূরাতে মক্কা বিজয়ের পর মানুষের দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

মক্কা মহানবি (সা.)-এর জন্মভূমি এবং বাসস্থান ছিল। কিন্তু সেখান হতে তাঁকে এবং তাঁর সাহাবিগণকে কাফেররা হিজরত করতে বাধ্য করেছিল। যখন ৮ম হিজরিতে এই মক্কা নগরী বিজয় হল তখন লোকেরা দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করতে লাগল। অথচ এর পূর্বে এক-দুজন করে মুসলমান হতো। মক্কা বিজয়ের পর মানুষের নিকট এ বিষয়টি পূর্ণভাবে পরিষ্কার হয়ে উঠল যে, তিনি আল্লাহর সত্য পয়গম্বর এবং ইসলামই হলো সত্য ধর্ম; যা অবলম্বন ব্যতীত পরকালে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

ইসলামের এ বিজয়ের ফলে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নবুয়তী দায়িত্বের পরিপূর্ণতাও বোঝানো হয়েছে। তাই বিশিষ্ট সাহাবীগণ এ সূরা নাযিল হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাত নিকটবর্তী বলে বুঝতে পেরেছিলেন। মহানবি (সা.) -এর দুনিয়াতে আগমন ও অবস্থান করার উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়েছে বলে এ সূরায় ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ সূরা দ্বারা আরও বোঝানো হয়েছে যে, কোনো ব্যাপারে যখন আল্লাহ তা'আলা সাহায্য করেন, তখন অনেক অসাধ্য কাজও সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। তখন আল্লাহর তাসবিহ, প্রশংসা এবং তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনায় অধিকতর মনোযোগী হওয়া আবশ্যক। উম্মে সালামাহ (রা.) বলেন, এই সূরা নাযিল হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) উঠাবসা, চলাফেরা তথা সর্বাবস্থায় (সুবাহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি) এই তাসবিহ পাঠ করতেন।

শিক্ষা

এ সূরার শিক্ষা নিম্নরূপ : 

১. সাহায্য ও বিজয় আসে একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থকে। 

২. আমাদের যাবতীয় কাজে আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন। 

৩. আল্লাহর সাহায্য ছাড়া সফলতা লাভ করা যায় না। 

৪. কোনো কাজে সফলতা আসলে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আল্লাহর প্রশংসা ও পবিত্রতা ঘোষণা করা উচিত। 

৫. যাবতীয় ত্রুটি, অপরাধ বা পাপ কাজের জন্য তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। 

৬. মহানবি (সা.)-এর কোনো পাপ কখনো ছিলো না। তবুও তাঁকে ইস্তেগফার করতে বলে মূলত আমাদের তাওবা ইস্তেগফার করতে উৎসাহিত করেছেন এবং শিক্ষা দিয়েছেন।

অতএব, সকল সাওয়াবের কাজ করতে ও পাপ কাজ থেকে বাঁচতে আমরা আল্লাহর সাহায্য চাইব। যখন আমাদের সফলতা আসবে, তখন আমরা আল্লাহর প্রশংসা করব। আর যদি কোনো ত্রুটি হয়ে যায়, এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব।

দলগত কাজ: শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সাথে সূরা আন নাসর তিলাওয়াত করবে। এরপর সূরাটির অর্থ খাতায় লিখে শিক্ষককে দেখাবে।
Content added By
Promotion